সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন

আগৈলঝাড়ায় বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারীতে মাছ চাষে আব্দুর রহিম এখন বেকারদের পথ প্রদর্শক

আগৈলঝাড়ায় বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারীতে মাছ চাষে আব্দুর রহিম এখন বেকারদের পথ প্রদর্শক

মোঃ জহিরুল ইসলাম সবুজ আগৈলঝাড়া:

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম পড়াশোনা করে কোন চাকুরি না করে বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে স্বাবলাম্বী হয়েছে তিনি। আব্দুর রহিমের বায়োফক পদ্ধতিতে মাস চাষ দেখে এলাকার অনেক যুবক উদ্বুদ্ধ হয়েছে বায়োফক পদ্ধতিতে মাস চাষ করতে। ইতোমধ্যে বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারি পরিদর্শনে আসেন বরিশাল দণিাঞ্চল পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন উপ-পরিচালক।

উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের আশোকসেন গ্রামে রুস্তম আলী মোল্লা পুত্র পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার আ.রহিম। চায়নায় জিয়াংসু ইউনির্ভাসিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার বি এস সি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে দেশে এসে চাকুরীর আশা না করে নিজেই কিছু করার জন্য এক বছর আগে বরিশাল জেলার বানারিপাড়ার বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানা এস.এ বায়োফক এর কাছে তিন মাস প্রশিক্ষন নেয়।

প্রশিক্ষন শেষে নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেন বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারি। বর্তমানে বায়োফেক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলেও অর্থের পূর্ন অভাবে গড়ে তুলতে পারেনি হ্যাচারী। বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য নিজ বাড়ীতে তৈরী করেছেন ২৫ হাজার লিটারের দুইটা তারপোলিন ট্যাংক। ১৫ হাজার লিটারের সিস্টেম ট্যাংক ১টা। এতে চাষ করতে পারেন ৫০ হাজার মাছ। খরচ হয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার। বিক্রয় হয় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও হ্যাচারীতে শিং মাছের পোনা উৎপাদন করে বজারজাত করণ করছেণ।

নিজের ভাগ্য ইন্নয়নে আব্দুর রহিম বর্তমানে এলাকার যুবকদের কাছে একজন পথ প্রদর্শক। আব্দুর রহিমের বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারী দেখে এলাকার যুব সমাজ বায়োফক বা সর্বাধিক আধুনিক পদ্ধুতিতে স্বল্প জায়গায় ঘন মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ ও হ্যাচারী সম্প্রসারনের জন্য সরকারি সহায়তায় কামনা করেছেন তিনি।

আব্দুর রহিমের এই বায়োফক বা সর্বাধীক আধুনিক ঘন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ায় গত শনিবার (৭আগষ্ট) বরিশাল দণিাঞ্চল পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন উপ-পরিচালক মো.মামুনুর রসিদ বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারি পরিদর্শন করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন বরিশাল দণিাঞ্চল পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন (এসএডি) মো.বসিরুল ইসলাম, আগৈলঝাড়া উপজেলা(ইউডিবিও) পরিতোষ কান্তি দাস, উপজেলা সিনিয়র ফিল্ড অফিসার এইচএম নাসির উদ্দিন, উপজেলা মাঠ কর্মকর্তা সেলিনা বেগম।

পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার (বি.এস.সি) আ.রহিম সাংবাদিকদের বলেন, বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষে মাছের বর্জ্য থেকে আবার খাবার তৈরি হয় তাই ২৫ শতাংশ খাদ্যে শতভাগ মাছ উৎপাদন করা যায়। প্রথম অবস্থায় এক লাখ টাকা খরচ করে কেউ ১০ হাজার লিটার পানির দুটি বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে তাদের ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ হবে। পরে তার মাছ ও খাবার ছাড়া অন্য বিনিয়োগ না হওয়ায় লাভের অঙ্কটা আরও বেশি হয়। এই হিসাবে যিনি যত বড় পানির আধার তৈরি করবেন, তার তত বেশি লাভ হবে। মাছের উৎপাদনের পরিমাণও বেশি হবে।

পুকুরে মাছ চাষ করলে কিছু না কিছু ঔষধ দিতে হয়। এতে করে মাছের প্রাকৃতিক গুণাগুণ নষ্ট হয়ে অনিরাপদ হয়ে ওঠে। কিন্তু বায়োফক পদ্ধতিতে ঔষধ প্রয়োগ করতে হয় না বলে এটি থাকে অত্যন্ত নিরাপদ ও প্রাকৃতিক।

তিনি আরও বলেন, চাকরির পেছনে না ছুটে শিতি, অর্ধশিতি, অল্পশিতি তরুণ-তরুণীরা এ পদ্ধতিতে মাছের চাষ বাড়ির উঠান, বাসার ছাদ বা পরিত্যক্ত জমি ব্যবহার করে স্বল্পপরিসরে, অল্প পুঁজিতে কমপে তিনগুণ বেশি মাছ উৎপাদন করা যেতে পারে। আধুনিক এ চাষ পদ্ধতি দেশে সম্প্রসারিত হলে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে। এ ছাড়া এই পদ্ধতিতে মাছের চাষ করলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতে রাখতে পারেন অবদান। সরকারি সহায়তায় দিয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলাসহ সারা দেশে বায়োফক পদ্ধতিতে মাছের চাষ ছড়িয়ে দেয়া যায়। তবে মাছ উৎপাদনে বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ স্থান থেকে বাংলাদেশ প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন আব্দুর রহিম।

বাবেল ফিস বায়োফক এন্ড হ্যাচারি পরিদর্শন শেষে দণিাঞ্চল পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রসিদ আব্দুর রহিমের প্রজেক্ট সম্পসারনের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করে বলেন, আব্দুর রহিমের মত বেকার যুবকেরা প্রশিক্ষন নিয়ে অধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে অল্পজায়গায় ও অল্পপূঁজিতে অধিক লাভবান হবে ও বেকারত্ব দুর হবে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com